আমার ভোটার আইডি কার্ড দেখতে চাই | কিভাবে দেখবো? (১ মিনিটে সমাধান)
নতুন ভোটার হয়েছেন এখন ও ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারেন নি? এখন মনে মনে ভাবছেন “আমার ভোটার আইডি কার্ড দেখতে চাই” কিন্তু ভোটার আইডি কার্ড দেখার নিয়ম কি?
এটা শুধু আপনার একার মনের ভাবনা নয়। এ বছরের সকল নতুন ভোটার এখন ও যারা স্মার্ট কার্ড পাননি। সবাই এই একই কথা ভাবছে।
আপনাদের এই মনের ভাবনা “আমার ভোটার আইডি কার্ড দেখতে চাই“ নিয়ে আমাদের আজকের এই পোস্ট। এখানে আমরা ভোটার আইডি কার্ড দেখার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি এবং ভোটার আইডি কার্ড বের করা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের সহজ সমাধান তুলে ধরেছি।
তাই আপনার ভোটার আইডি কার্ড দেখতে পুরো পোস্ট টি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
আপনি কি আপনার ভোটার আইডি কার্ড দেখতে চান?
বর্তমানে বাংলাদেশে সকল এনআইডি কার্ডই স্মার্ট আইডি কার্ড। এখন বাংলাদেশি সব নাগরিকের সকল ভোটার আইডি কার্ডে তার বায়মেট্রিক তথ্য যেমন ফিঙ্গার প্রিন্ট, আইরিশ স্ক্যান সহ ২৮ ধরনের তথ্য আপলোড করা থাকে।
বাংলাদেশি সকল ভোটারের তথ্য অনলাইনে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটের নিজস্ব ডাটাবেজে সংরক্ষন করা হয়েছে। তাই কেউ চাইলেও ভোটার আইডি কার্ড নকল করে চালাতে পারবে না।
ভোটার আইডি কার্ডের সকল ডেটা অনলাইন ডাটাবেজে থাকায় যে কেউ চাইলে যেকোনো মুহূর্তে তার ভোটার আইডি কার্ড দেখতে পারবে। এখন তাহলে আপনি ও কি ভাবছেন যে আমি “আমার ভোটার আইডি কার্ড দেখতে চাই” ।
যদি তাই হয়ে থাকে!!! তাহলে চলুন ভোটার আইডি কার্ড দেখার নিয়ম অনুসরণ করে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র বের করা যাক।
শিখে রাখুনঃ ১০ ডিজিটের জাতীয় পরিচয় পত্র চেক করার নিয়ম
ভোটার আইডি কার্ড দেখার নিয়ম
ভোটার আইডি কার্ড দেখার জন্য শুধুমাত্র আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার ও জন্ম তারিখ জানা প্রয়োজন। শুধুমাত্র এই দুইটি তথ্য জানা থাকলে আপনি খুব সহজেই আপনার ভোটার আইডি কার্ড দেখতে পারবেন।
যদি এই তথ্য দুইটি আপনার জানা থাকে তাহলে নিচে দেওয়া ধাপগুলো অনুসরণ করে আপনার ভোটার আইডি কার্ড দেখে নিন।
আরও পড়ুনঃ ভোটার স্লিপ দিয়ে অনলাইন কপি ডাউনলোড করার নিয়ম
নতুন ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে যা লাগবে
আপনি এখন ও যদি আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার না জেনে থাকেন তাহলে আপনার ভোটার আইডি কার্ড দেখার জন্য বা ডাউনলোড করার জন্য যা যা দরকার হবেঃ
- ভোটার নিবন্ধন ফরমের স্লিপ নম্বর
- জন্ম তারিখ
- বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা (বিভাগ, জেলা, উপজেলা)
- একটি স্মার্টফোন বা ল্যাপটপ বা কম্পিউটার
- সচল মোবাইল নম্বর (OTP ভেরিফিকেশন করার জন্য)
- অন্য একটি এন্ড্রয়েড স্মার্ট ফোন (ফেইস ভেরিফিকেশন করার জন্য)
দুইটি ফোন না থাকলেও সমস্যা নাই। একটি ট্যাব ক্লোজ করে ফেইস ভেরিফিকেশন করতে পারবেন।
এবার তাহলে আসল কাজ বা “আমার ভোটার আইডি কার্ড দেখতে চাই” নিয়ে কাজ শুরু করা যাকঃ
ধাপ ১ঃ NID Application System ওয়েবসাইটে ভিজিট করুন
Bangladesh NID Application System ওয়েবসাইট nidw.gov.bd এ ভিজিট করতে হবে। এই ওয়েবসাইটের ডাটাবেজে দেশের সকল এনআইডি কার্ডের ভোটার তথ্য সংরক্ষিত রয়েছে। তাই আমরা এই ওয়েবসাইটিতে ভিজিট করে ভোটার আইডি কার্ড দেখার নিয়ম অনুসরণ করে ভোটার আইডি কার্ড বের করব।
ওয়েবসাইটির লিংক – https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/।
ধাপ ২ঃ লগিন অথবা রেজিস্টার করুন
আপনি যদি আগে এই ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট করে থাকেন তবে ওয়েবসাইটে ভিজিট করে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগিন করুন।
আর যদি আপনার অ্যাকাউন্ট না থাকে তাহলে জাতীয় পরিচয় পত্র নাম্বার ও অন্যান্য তথ্য দিয়ে নতুন একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করে নিতে হবে। নতুন ভোটার নিবন্ধন করে থাকলে স্লিপ নাম্বার/ফরম নাম্বার দিয়ে অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে।
ধাপ-৩ঃ রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করুন
রেজিস্টার করুন অপশনে ক্লিক করার পর আপনি এমন একটি ওয়েবপেজ দেখতে পাবেন এখানে আপনার ভোটার স্লিপ নাম্বার/ টোকেন নাম্বার/ ভোটার নাম্বার ও জন্ম তারিখ প্রবেশ করান এরপর ক্যাপচা কোডটি দেখে দেখে নিচের বক্সে লিখে সাবমিট বাটনে ক্লিক করুন।
- স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা প্রদান
একাউন্ট রেজিস্ট্রারের দ্বিতীয় ধাপ হলো আপনার স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা উল্লেখ করা। আপনার ভোটার আইডি কার্ড অনলাইন কপি ডাউনলোড করার জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।
তাই আপনার এনআইডি অ্যাকাউন্ট তৈরি করার জন্য অবশ্যই আপনাকে আপনার বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে। তারপর আপনি পরবর্তী ধাপে যেতে পারবেন।
- এসএমএস ভেরিফিকেশন
ভোটার স্লিপ দিয়ে অনলাইন কপি ডাউনলোড করার তৃতীয় ধাপ হলো মোবাইল এসএমএস ভেরিফিকেশন। আপনি নতুন ভোটার নিবন্ধন করার সময় যে মোবাইল নাম্বার টি ব্যবহার করেছেন সেই মোবাইল নাম্বারটি এখানে দেখতে পাবেন।
আপনি চাইলে নাম্বার পরিবর্তন করুন /change number অপশনে ক্লিক করে অন্য মোবাইল নাম্বার ব্যবহার করতে পারবেন।
এখন “ বার্তা পাঠান” অপশনে ক্লিক করুন।
- OTP নিশ্চিতকরন
এবার আপনার মোবাইল নাম্বারে যাওয়া এসএমএস থেকে ৬ ডিজিটের কোডটি এন্ট্রি করে এসএমএস ভেরিফিকেশন সম্পন্ন করুন।
- ফেইস ভেরিফিকেশন
এনআইডি একাউন্ট রেজিস্টার এর চতুর্থ আর বিরক্তিকর ধাপ হল ফেস ভেরিফিকেশন। এটা ছাড়া কোন ভাবেই আপনি একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন না।
এখানে ফেইস ভেরিফিকেশন করার জন্য পেইজে একটি QR Code সম্বলিত ছবি দেখতে পাবেন। এই QR কোডটি স্ক্যান করার জন্য Google Play Store থেকে NID wallet অ্যাপটি ডাউনলোড করে install করুন।
এরপর পেজের QR কোডটি স্ক্যান করুন।
এরপর দেখানো নিয়ম অনুযায়ী আপনার চেহারা স্ক্যান করুন।
এই স্টেপ সম্পন্ন করার জন্য আপনি অন্য কোন ডিভাইস দিয়ে করতে পারেন অথবা আপনি ব্রাউজারকে মিনিমাইজ করে NID Wallet অ্যাপ ওপেন করে কাজ চালিয়ে যেতে পারেন।
- ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড সেট
অ্যাকাউন্ট রেজিস্টার এর সর্বশেষ ধাপ হল ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড সেট করা। আপনার ফেস ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হলে আপনাকে পরবর্তী পেজে নিয়ে যাওয়া হবে। এখানে আপনাকে একটি ছয় সংখ্যার পাসওয়ার্ড সেট করতে হবে।
পরবর্তীতে আপনার অ্যাকাউন্ট এ লগইন করার জন্য অথবা পরবর্তীতে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার জন্য আপনাকে অবশ্যই এই পাসওয়ার্ডটি মনে রাখতে হবে।
আর যদি আপনি পাসওয়ার্ড সেট করতে না চান তাহলে এড়িয়ে যান অপশনে ক্লিক করে পরবর্তী পদক্ষেপে যেতে পারেন।
ধাপ-৪ঃ ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড
আপনার রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হওয়ার পর আপনার ছবিসহ বিস্তারিত তথ্য দেখতে পাবেন। এখানে নিচের দিকে ডাউনলোড নামের অপশনটিতে ক্লিক করুন।
ডাউনলোড অপশনে ক্লিক করার পরে আপনার ভোটার আইডি কার্ড অনলাইন কপি দেখতে পাবেন। এর উপরের অংশে ডানদিকে ডাউনলোড বাটন দেখতে পাবেন ওখানে ক্লিক করলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র ডাউনলোড হয়ে যাবে।
কিছু প্রশ্নের উত্তরঃ
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড কিভাবে বের করব?
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করার সহজ একটি প্রক্রিয়া এই আর্টিকেলে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। আর্টিকেলে উল্লিখিত ভোটার আইডি কার্ড দেখার নিয়ম দেখে দেখে অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড বের করতে পারবেন।
ভোটার আইডি কার্ড পেতে কতদিন লাগে?
সাধারণত নতুন ভোটার নিবন্ধন করার ৪০/৪৫ দিন পর আপনার ভোটার আইডি কার্ড অনলাইন কপি রেডি হয়ে যায়। আপনি চাইলে এই জাতীয় পরিচয়পত্র অনলাইন কপি ডাউনলোড করে প্রিন্টআউট করে কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন।
তারপর আপনার স্মার্ট কার্ড আসতে একটু সময় লাগবে। আপনার স্মার্ট কার্ডটি রেডি হয়ে আপনার সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে আসলে আপনাকে ম্যাসেজে জানিয়ে দিবে। অথবা আপনি চাইলে অনলাইনে আপনার স্মার্ট কার্ড স্ট্যাটাস চেক করতে পারবেন।
ভোটার আইডি কার্ড কিভাবে বানাবো?
উল্লিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট থেকে আপনার ভোটার আইডি কার্ড অনলাইন কপি ডাউনলোড করে প্রিন্টআউট করে নিতে পারবেন। অনলাইন থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র অনলাইন কপি pdf আকারে সরবরাহ করে। তাই আপনাকে এটি প্রিন্ট করে লেমিনেটিং করে নিতে হবে।
বর্তমানে ভোটার আইডি নাম্বার দিয়ে আপনার সকল তথ্য যাচাই করা সম্ভব। তাই কোন প্রকার এডিট বা তথ্য পরিবর্তন করলে আপনি ঝামেলায় পরবেন।
ভোটার আইডি কাড অনলাইন কপি ডাউনলোড করার উপায় কি?
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড অনলাইন কপি ডাউনলোড নিয়ম আর আমার ভোটার আইডি কার্ড দেখতে চাই প্রশ্নের সমাধান একই সুতোয় গাঁথা। উপরে উল্লিখিত ধাপগুলো অনুসরণ করে আপনি খুব সহজেই আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে পারবেন।
পরিশেষ
“আমার ভোটার আইডি কার্ড দেখতে চাই” বিষয় নিয়ে আজকের আলোচনা এই পর্যন্তই। আমরা এখানে ভোটার আইডি কার্ড দেখার নিয়ম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি সেই সাথে ভোটার আইডি কার্ড বের করা নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের সহজ সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
আশা করছি আপনারা এই পোস্ট দেখে দেখে আপনার ভোটার আইডি কাড অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে পারবেন। পুরো বিষয়টি নিয়ে আপনার মুল্যবান মতামত অথবা কোন প্রশ্ন থাকলে আমদেরকে কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন।