অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ডে নাম সংশোধন করার নিয়ম – NID Card Name Correction
আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ডে ভুল নাম এসেছে? এখন আপনি ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন করার কথা ভাবছেন।
তাহলে এই পোস্ট টি আপনার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে। আমরা আজকে এই পোস্টে ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন করার নিয়ম ও প্রয়োজনীয় সকল তথ্য নিয়ে আলোচনা করব। পুরো পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পরুন।
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন
অনেক ক্ষেত্রে ভুলবশত ভোটার আইডি কার্ডে নাম অথবা নামের বানান ভুল হয়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনি জাতীয় পরিচয়পত্র টি কোথাও ব্যবহার করতে পারবেন না। প্রতিটি ক্ষেত্রে আপনাকে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।
তাই যত দ্রুত সম্ভব আপনাকে ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে অনলাইনে আবেদন করে নাম সংশোধন ফি পরিশোধ করে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিসে জমা দিতে হবে।
কিন্তু কথা হচ্ছে অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন করতে কত টাকা ও কি কি ডকুমেন্ট লাগে ?
জেনে নিন অনলাইনে এনআইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে?
ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন করতে কি কি লাগে?
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন করতে নিচের ডকুমেন্টগুলো প্রয়োজন হয় ।
- পিইসিই/ জেএসসি/ এসএসসি বা সমমান/ বা তার উর্দ্ধে কোন সনদ
- জন্ম নিবন্ধন
- পাসপোর্ট (যদি থাকে )
- ড্রাইভিং লাইসেন্স (যদি থাকে )
- বিবাহের কাবিন নামা (যদি থাকে )
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত টাকা লাগবে?
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন করতে ২৩০ টাকা ফি পরিশোধ করতে হয়। অন্যান্য তথ্য সংশোধনের জন্য ১১৫ টাকা ফি পরিশোধ করতে হয়। নাম ও অন্যান্য তথ্য একসাথে সংশোধন করতে চাইলে ৩৪৫ টাকা পরিশোধ করতে হবে।
তবে দ্বিতীয় বার সংশোধনীর জন্য প্রতিবারে আইডি কার্ড রি-ইস্যু করার জন্য ৫৭৫ টাকা ফি হিসেবে পরিশোধ করতে হবে।
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের NID সংশোধন করার ২ টি নিয়ম রয়েছে।
- অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন।
- অফিসে ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন।
আপনি চাইলে এর মধ্যে যেকোনো একটি অনুসরণ করে ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন করতে পারেন।
এবার চলুন তাহলে nid সংশোধন করার নিয়ম দুটো বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন – NID Name Correction Online
আপনি চাইলে ঘরে বসে অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধনের জন্য আবেদন করতে পারেন। এটি একটি সহজ ও দ্রুত পদ্ধতি ।
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট services.nidw.gov.bd এ গিয়ে আপনার তথ্য দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে আপনার জন্য একাউন্ট তৈরী করুন। রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে username ও password দিয়ে লগ-ইন করুন।
লগ-ইন হয়ে গেলে এবার আপনার নাম, পিতার নাম, মাতার নাম, জন্ম তারিখ, ছবিসহ যাবতীয় তথ্য দেখতে পাবেন। এই তথ্যগুলো এডিট করার মাধ্যমদনাম পরিবর্তনের জন্য আবেদন করা পারবেন।
আপনার নাম পরিবর্তন করে যে নাম দিতে চান তা টাইপ করুন। ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফি পরিশোধ করে অনলাইনে nid সংশোধনের আবেদন সম্পন্ন করুন এবং আবেদন টি সাবমিট করুন। এরপর আপনার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিসে গিয়ে জমা দিতে হবে।
আপনার স্মার্ট কার্ডের সংশোধনের কার্যক্রম শেষ হলে আপনাকে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দিবে। তখন আপনি আপনার সংশোধিত ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারেন।
অফিসে ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন – NID name correction
অফিসে গিয়েও NID Name Correction করা যায়। সেক্ষেত্রে আপনাকে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন ফরম ২ সংগ্রহ করে পূরণ করতে হবে।
তারপর এন আই ডি কার্ড সংশোধন ফি রকেট অথবা বিকাশ অ্যাপের মাধ্যমে জমা দিয়ে তার রশিদ ও আপনার প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলো ফরমের পিছেনে পিন-আপ করে জমা দিয়ে দিন। তাহলে আপনার ভোটার আইডি কার্ড নাম সংশোধন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাবে ।
আপনার স্মার্ট কার্ডের সংশোধনের কার্যক্রম শেষ হলে আপনাকে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দিবে। তখন আপনি আপনার সংশোধিত ভোটার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারেন।
তবে অনলাইনে এনআইডি কার্ড সংশোধন করলে অফিসে যাওয়া আসার কষ্ট, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তার জন্য অপেক্ষা করা, এবং সময় ব্যয় করার প্রয়োজন হয় না। বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে ঘরে বসে অনলাইনে ভোটার আইডি কাড সংশোধন এর আবেদন করাই ভালো।
বাংলা নাম অনুসারে ইংরেজি বা ইংরেজি নাম অনুসারে বাংলা
এখন বিভিন্ন প্রয়োজনে আমাদের বাংলা নামের পাশাপাশি ইংরেজি নামের প্রয়োজন হয়। তবে অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের ভোটার আইডি কার্ডে বাংলা নাম ঠিক থাকলেও ইংরেজি নামের বানানে ভুল আসে। ফলে আমাদের পাসপোর্ট বা অন্যান্য জরুরি কাজে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়।
বর্তমানে ভোটার আইডি কার্ডের ইংরেজি নাম অনুসারে বাংলা নাম সংশোধন অথবা বাংলা নাম অনুসারে ইংরেজি নাম সংশোধন করতে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলোঃ
- জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি
- শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের কপি
- পাসপোর্ট অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্সের
কিছু প্রশ্নের উত্তরঃ
ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন করতে কি কি লাগে?
উত্তরঃ ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন করতে সিটি কর্পোরেশন/ পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক প্রদত্ত নাগরিকত্ব সনদ, জন্ম নিবন্ধন সনদ, পাসপোর্ট, জমির দলিল, বিদ্যুৎ /পানি/ গ্যাস বিলের কপি, বা অন্যান্য গ্রহণযোগ্য ডকুমেন্ট লাগবে।
ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে?
উত্তরঃ যদিও ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করার জন্য ক্যাটেগরি ভেদে ভিন্ন ভিন্ন ডকুমেন্টের প্রয়োজন হয়।তবে প্রায় সব ক্যাটেগরির সংশোধনের জন্য সাধারণত শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, জন্ম নিবন্ধন, মা-বাবার এনআইডি কার্ড, পাসপোর্ট, ড্রাইভিং লাইসেন্স, বিবাহ কাবিন নামার প্রয়োজন হয়।
ভোটার আইডি কার্ড বা স্মার্ট আইডি কার্ড সংশোধনের জন্য কমপক্ষে ২ টি প্রমাণপত্র বা ডকুমেন্ট আপলোড করা উচিত।
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে কত দিন লাগে?
উত্তরঃ অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে ক্যাটেগরিভেদে ৭ থেকে ৪৫ কর্মদিবস সময় লাগে। ”ক” ক্যাটাগরির সংশোধনে ৭ দিন, ”খ” ক্যাটাগরির সংশোধনে ১৫ দিন, “গ” ক্যাটাগরির সংশোধনে ৩০ দিন আর “ঘ” ক্যাটাগরির সংশোধনে প্রায় ৪৫ দিন সময় লাগতে পারে।
অনলাইনে এনআইডি কার্ড সংশোধন করতে কি কি লাগে?
উত্তরঃ অনলাইনে এনআইডি কার্ড সংশোধন করতে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, জন্ম নিবন্ধন সনদ, মা-বাবার এনআইডি কার্ডের কপি, পাসপোর্ট অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্স, অন্যান্য ডকুমেন্ট।
এগুলোর মধ্যে কমপক্ষে ২ টি প্রমাণপত্র বা ডকুমেন্ট আপলোড করা উচিত।