ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার নিয়ম - How to Cancel NID Card

ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার নিয়ম – How to Cancel NID Card

জেনে নিন ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার নিয়ম (How to Cancel NID Card) কারন ভুলবশত বা ইচ্ছাকৃত দ্বৈত ভোটার হওয়া একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কেউ ভুলবশত দ্বৈত ভোটার হলে তাকে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন বরাবর আবেদন করে ডুপ্লিকেট ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করতে হবে।

আপনি ও যদি ডুপ্লিকেট ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করতে চান। তাহলে আপনার সুবিধার জন্য এখানে জাতীয় পরিচয়পত্র বাতিল করার ধাপগুলো বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এই ধাপগুলো অনুসরণ করে আপনি সহজেই ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করতে পারবেন।

ভোটার আইডি কার্ড বাতিল – Cancel NID Card

কেউ শখ করে ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র বাতিল করতে চায় না। যখন কিছু জটিল সমস্যার সমাধান না পেয়ে নিরুপায় হয়ে ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার উপায় খোঁজে। তবে কিভাবে এনআইডি কার্ড বাতিল করতে হয় সে সম্পর্কে জানা নেই।

এর ফলে তারা অনেক ক্ষেত্রে সন্ধিহান হয়ে পরে। সিদ্ধান্ত নিতে পারে না, এখন তার কি করা উচিৎ। তাই আজকে আমরা এই পোস্টে আলোচনা করব “ভোটার আইডি কার্ড বাতিল নিয়ম” সম্পর্কে। চলুন জেনে নেয়া যাক কিভাবে ডুপ্লিকেট জাতীয় পরিচয়পত্র বাতিল করতে হয়।

ভোটার আইডি কার্ড কি বাতিল করা যায়? যদি যায় তাহলে কিভাবে?

একজন ব্যক্তির ভোটার তথ্য দিয়ে তার জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্ট আইডি কার্ড তৈরী হয়। তাই কেউ তার ভোটার তথ্য দিয়ে একটি ভোটার আইডি কার্ড নিতে পারে। কোন কারনে দুইটি এনআইডি কার্ড নিলে তা একটি ঝামেলার কারন হয়ে দাঁড়াবে এবং এতি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

তাই আপনাকে একটা এনআইডি কার্ড বাতিল করে আসল Nid Card ব্যাবহার করতে হবে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে ভোটার আইডি কার্ড কি বাতিল করা যায়? যদি যায় তাহলে কিভাবে?

আপনি যদি দ্বৈত ভোটার হয়ে থাকেন বা দুইটি ভোটার কার্ড ব্যবহার করে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে একটি ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করতে পারেন। কিন্তু আপনি যদি একটি স্মার্ট কার্ড ব্যাবহার করেন কিন্তু সেখানে আপনার কোন তথ্য ভুল থাকে তাহলে আপনাকে ভোটার কার্ড সংশোধন করতে হবে। সেক্ষেত্রে আপনি ভোটার কার্ড বাতিল করতে পারবেন না।

এখন কথা হল ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার নিয়ম কি? চলুন কয়েকটি সহজ ধাপের মাধ্যমে ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার নিয়মটি জেনে নেওয়া যাক।

জাতীয় পরিচয়পত্র বাতিল করার নিয়ম:

জাতীয় পরিচয়পত্র বাতিল / এন আই ডি কার্ড বাতিল করা একটি সহজ প্রক্রিয়া হলেও আপনাকে কয়েকটি ধাপ সম্পূর্ণ করতে হবে। এক্ষেত্রে সবথেকে ভাল উপায় হচ্ছে আপনার জেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলুন। তার দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ধাপগুলো অনুসরণ করুন।

তাছাড়া অনলাইনে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট services.nidw.gov.bd এ ভোটার আইডি কার্ড বাতিল সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাবেন। সেখান থেকে ‌আপনি অনলাইনে অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে এনআইডি কার্ড বাতিল করতে পারবেন।

তবে প্রায় সব ক্ষেত্রে  জাতীয় পরিচয়পত্র বাতিল করার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করা হয়।

  • ধাপ ১: প্রথমে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের জেলা নির্বাচন অফিসার বরাবর একটি লিখিত ক্ষমা প্রার্থনা ও আইডি কার্ড বাতিলের আবেদন করা;
  • ধাপ ২: আপনার পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেওয়া;
  • ধাপ ৩: আবেদন ফি পরিশোধ করে টাকার রশিদের কপি আবেদনের সাথে সংযুক্ত করা
  • ধাপ ৪: আবেদনের সাথে Duplicate ভোটার আইডি কার্ড ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় Document জমা দিয়ে আবেদন সম্পন্ন করা।

চলুন এবার তাহলে জাতীয় পরিচয়পত্র বাতিল / ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার ধাপগুলো বিস্তারিত আলোচনা করি।

ধাপ ১: লিখিত আবেদন জমা দিন

ভুলবশত ২য় বার ভোটার নিবন্ধন হয়েছে এই মর্মে একটি ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার জন্য জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বরাবর, একটি আবেদন লিখুন। আবেদনটি কম্পিউটার কম্পোজ করে নিলে ভাল হয়।

আবেদনে আপনার Duplicate এনআইডি নম্বর উল্লেখ করবেন। তারপর আপনার সঠিক ও আসল এনআইডি নম্বরটি উল্লেখ করুন যেটি আপনি ভবিষ্যতে রাখতে চান। আবেদনের নিচে সংযুক্তিতে লিখে দিন আবেদনের সাথে কি কি কাগজপত্র জমা দিচ্ছেন।

ধাপ ২:আবেদন ফি পরিশোধ

Duplicate এনআইডি বা জাতীয় পরিচয় পত্র বাতিল করার জন্য আপনাকে ভোটার কার্ড বাতিল ফি পরিশোধ করতে হবে, যথা নিয়মে (অনলাইন ব্যাংকিং বা ব্যাংক ড্রাফট) এর মাধ্যমে তা পরিশোধ করুন। এরপর এই ফি পরিশোধের রশিদ আবেদনের সাথে সংযুক্ত করে দিন।

ধাপ ৩: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিন

আপনার এনআইডি কার্ড বাতিল করার জন্য অবশ্যই আপনার সঠিক পরিচয় নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য আপনার বর্তমান  এনআইডি/ জন্ম নিবন্ধন সনদ, Academic Certificate, Passport অথবা Driving License কপি বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসের সত্যয়িত কপি জমা দিতে হবে।

এরপর বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন থেকে আপনার লিখিত অনুরোধ গ্রহন করা হলে, আপনার ডুপ্লিকেট ভোটার আইডি বা Smart Card টি ফেরত দিতে হবে। এর সাথে আপনি যে স্মার্ট কার্ডটি ব্যবহার করতেছেন এবং ভবিষ্যতে ব্যবহার করতে চান, তার একটি কপি জমা দিতে হবে।

Duplicate ভোটার নিবন্ধনের জরিমানা কত?

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের শর্ত মোতাবেক, ইচ্ছাকৃতাবে নাম বা বয়স পরিবর্তন করে একাধিক বার ভোটার নিবন্ধন করা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এরকম দ্বৈত বা Duplicate ভোটার নিবন্ধন করলে ৬ মাসের কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ড হতে পারে।

FAQ’s

  1. দ্বৈত ভোটার হলে করনীয় কি?

    ভুলবশত বা ইচ্ছাকৃত দ্বৈত ভোটার হওয়া একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কেউ ভুলবশত দ্বৈত ভোটার হলে তাকে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন বরাবর আবেদন করে ডুপ্লিকেট ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করতে হবে।

  2. ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করতে কি কি লাগে?

    ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করতে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস সহ জেলা নির্বাচন অফিসার বরাবর একটি লিখিত আবেদন করা  লাগবে।
    এর জন্য আপনি যে আইডি বাতিল করতে চান তার NID নম্বর, আসল জাতীয় পরিচয় পত্র, জন্ম নিবন্ধন সনদ, শিক্ষা সনদ, পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স ও অন্যান্য ডকুমেন্টস জমা দিতে হবে।

  3. ভোটার নিবন্ধন বাতিল করতে কত দিন লাগে?

    ভোটার নিবন্ধন বাতিল করতে মোটামটি ১ মাস সময় লাগে। তবে কার্যক্ষেত্রে এর থেকে বেশি লাগতে পারে।

  4. ভোটার আইডি কার্ড বাতিল করার জন্য কত টাকা লাগে?

    ভোটার আইডি কার্ড বা এনআইডি বাতিল করতে ১০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে।

  5. ডুপ্লিকেট ভোটার নিবন্ধন করলে কি শাস্তি হতে পারে?

    দ্বৈত বা ডুপ্লিকেট ভোটার নিবন্ধন একটি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এটি ক্রসম্যাচিং এ ধরা পরলে ৬ মাসের কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা জেল ও অর্থ উভয় দন্ড হতে পারে।