সহজে অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা/এলাকা পরিবর্তন করবেন যেভাবে

সহজে অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা/এলাকা পরিবর্তন করবেন যেভাবে

অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন করতে চান? জেনে নিন ভোটার আইডি কার্ড ট্রান্সফার করার নিয়ম সহ প্রয়োজনীয় সকল ধাপের বর্ণনা।

আপনার পূর্বের ঠিকানা হতে নতুন ঠিকানায় ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার জন্য আপনাকে ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন ফরম পুরন করে আবেদন করতে হবে।

যদি আপনি ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও আবেদনের নিয়ম না জেনে থাকেন, তবে আজকের এই পোস্টটি আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে। এখানে আমরা ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন করার নিয়ম ও এই বিষয় নিয়ে বহুল জিজ্ঞাসিত কিছু প্রশ্নের সহজ সমাধান তুলে ধরেছি।

আপনার ভোটার আইডি কার্ড ট্রান্সফার করার জন্য পোস্ট টি মনোযোগ সহকারে পরুন।

ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন

ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয়পত্র বর্তমান সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট। ভোট দেওয়া, চাকরিতে আবেদন বা যোগদান করা, পাসপোর্ট বানানো, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা, জমির দলিল করাসহ সকল গুরুত্বপূর্ণ কাজে ভোটার আইডি কার্ডের প্রয়োজন।

কিন্তু আপনি আগে যে ঠিকানায় আইডি কার্ড বানিয়েছিলেন এখন আর সেখানে থাকেন না, নতুন এলাকায় এসেছেন। তাহলে এই ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা দিয়ে কোন নাগরিক সেবা নিতে পারবেন না। তাই যত দ্রুত সম্ভব আপনাকে আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন করে নিতে হবে।

আপনি চাইলে বাংলাদেশ নির্বাচন অফিসে আবেদন করে ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন করতে পারবেন। ঠিকানা পরিবর্তন করার এই পদ্ধতিকে ভোটার আইডি কার্ড ট্রান্সফার বা ভোটার আইডি কার্ড মাইগ্রেশন বলে।

এখন হয়ত আপনার মনে প্রশ্ন জাগছে ভোটার আইডি কার্ড ট্রান্সফার করার নিয়ম কি? ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন করতে কি কি লাগে? কিংবা ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কতদিন সময় লাগে?

চলুন আপনার এসব প্রশ্নের সহজ সমাধান জেনে নেওয়া যাক।

ভোটার আইডি কার্ড ট্রান্সফার করার নিয়ম

বর্তমানে ভোটার আইডি কার্ড ট্রান্সফার সহজতর করার জন্য বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন দুইটি পদ্ধতি ছালু করেছে।

  1. অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন
  2. সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিসে গিয়ে আবেদন করে

ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন ফরম

উপরোক্ত দুইটি পদ্ধতির মধ্যে আপনি যেটাই অবলম্বন করেন না কেন আপনাকে ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন ফরম পুরন করতে হবে।

ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন ফরম

নিচে ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন ফরম নমুনা কপি দেওয়া হল। আপনি চাইলে এখানে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।

ফরমটি আপনার প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে পুরন করুন।

যেমনঃ

  • আপনার নাম
  • পিতা মাতার নাম
  • এনআইডি কার্ড নাম্বার
  • জন্ম তারিখ
  • পূর্বের ভোটার এলাকা
  • যে এলাকার ভোটার হতে চান সেই ঠিকানা
  • ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার কারন
  • ইত্যাদি

সবশেষে আবেদনকারীর স্বাক্ষর হিসেবে আপনার স্বাক্ষর দিতে হবে।

আবেদন ফরমটি পুরন করার সময় কোন ভুল তথ্য দেওয়া বা কাটাকাটি করা যাবে না। তাই আবেদন ফরমটির দুই কপি প্রিন্ট করে নিয়ে আগে একবার খসড়া কপি পুরন করে নিতে পারেন।

অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন

অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন একটি সহজ প্রক্রিয়া যা বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন বিনামুল্যে প্রদান করছে।এটি করার জন্য আপনাকে প্রথমে নির্বাচন কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে একটি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।

তবে আপনাদের মধ্যে অনেকেই নতুন আইডি কার্ড ডাউনলোড করার সময় অ্যাকাউন্ট খুলে নিয়েছেন। আপনি যদি আগে অ্যাকাউন্ট তৈরি না করে থাকেন, তাহলে এই পোস্টটি অনুসরণ করে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারেন।

যাহোক অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়ে গেলে এবার আসল কাজ শুরু করা যাক।

  • প্রথমত বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের https://services.nidw.gov.bd/nid-pub/ এই লিঙ্কে ক্লিক করুন।
  • এখানে আপনার ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন।
  • এরপরে আপনার প্রোফাইলে গিয়ে এডিট অপশনে ক্লিক করুন।
  • কোন পপ-আপ অথবা ওয়ার্নিং ম্যাসেজ দেখালে “ বহাল “ বাটনে ক্লিক করুন।
  • এডিট প্রফাইল অপশন থেকে ব্যক্তিগত/ অন্যান্য তথ্য/ ঠিকানা এই তিনটা অপশন থেকে “ ঠিকানা “ অপশন বাছাই করুন।
  • এখানে আপনার বর্তমান ঠিকানা লিখুন।
  • সবশেষে বহাল অপশনে ক্লিক করে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করুন। (নিচের স্ক্রিনশট দেখুন)
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন
অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন

এখানে আপনি শুধুমাত্র বর্তমান ঠিকানা পরিবর্তন করতে পারবেন। পরবর্তীতে আপনার ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার জন্য স্থায়ী ঠিকানা পরিবর্তন করতে হবে। এটি করার জন্য নির্বাচন কমিশন অফিসে যেতে হবে।

ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

জীবনের বিভিন্ন সময়ে ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন করার প্রয়োজন হয়। অনলাইনে ভোটার এলাকা স্থানান্তর করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হয়।

এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে আপনি যে নতুন ঠিকানায় ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে চাচ্ছেন সেই ঠিকানার যাবতীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে।

চলুন এক নজরে দেখে নেওয়া যাক ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন করতে কি কি লাগেঃ

  • আবেদনকারীর NID ফটোকপি
  • সিটি কর্পোরেশন/ পৌরসভা/ ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃক প্রদত্ত নাগরিকত্ব সনদ
  • জমির দলিল (যদি থাকে)
  • ইউটিলিটি বিল
  • জন্ম নিবন্ধন
  • পাসপোর্ট (যদি থাকে)
  • ফরম-১৩ এর ২য় পৃষ্ঠায় সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধির (মেম্বার/কাউন্সিলর) NID নাম্বার সহ নাম, স্বাক্ষর ও সিল।
  • সংস্লিষ্ট উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসের চাহিদামত অন্যান্য সকল কাগজপত্র।
  • অন্যান্য প্রমাণ

নতুন আইডি কার্ড বের করার নিয়ম

অনলাইনে ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন করার পর এখন প্রসঙ্গ আসে নতুন আইডি কার্ড বের করা। আপনাদের মধ্যে অনেকেই নতুন আইডি কার্ড বের করার নিয়ম জানে না।

যদিও এটা খুব সহজ পদ্ধতি তারপরেও না জানার কারনে অনেকেই আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারে না।

আপনি যদি তাদের মধ্যে একজন হয়ে থাকেন, তাহলে নিচের ধাপটি অনুসরণ করে সংশোধিত আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারেন।

প্রথমে username ও password দিয়ে আপনার একাউন্টে লগইন করুন। এখানে আপনার ছবি, এনআইডি নম্বর সহ আপনার ভোটার তথ্য দেখতে পাবেন।

ডানপাশে ডাউনলোড অপশন এ ক্লিক করে আপনার আইডি কার্ড ডাউনলোড করতে পারবেন। এরপর কালার প্রিন্টারে প্রিন্ট করার পরে লেমিনেট করে ব্যবহার করতে পারবেন।

বহুল জিজ্ঞাসিত কিছু প্রশ্নের উত্তরঃ

ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন করতে কি কি লাগে?

ভোটার আইডি কার্ডের ঠিকানা পরিবর্তন করতে সাধারণত নিচের ডকুমেন্টগুলোর দরকার হয়।

  1. আবেদনকারীর NID ফটোকপি
  2. যে এলাকায় স্থানান্তর হবেন উক্ত এলাকার নাগরিকত্ব সনদ
  3. সে এলাকার বিদ্যুৎ/পানি বিল/ট্যাক্স রশিদ/জমির খতিয়ান তথা ইউটিলিটি বিলের কপি।
  4. শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ ( অপশনাল )

ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কতদিন সময় লাগে?

ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে সাধারণত ১০-১৫ দিন সময় লাগে। আবার কখনো কখনো ১ মাসের উপরে সময় লেগে যায়। এটা সম্পূর্ণই নির্ভর করে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, কর্মচারীদের কাজের ব্যস্ততার উপর। 

ভোটার এলাকা পরিবর্তন করতে কত টাকা লাগে?

ভোটার এলাকা পরিবর্তন করার জন্য কোন ফি জমা দেয়া লাগে না। অর্থাৎ সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে ভোটার এলাকা পরিবর্তনের সুযোগ দেয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *